২০১৪ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে সিরাজগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলাসহ ৯টি মামলার আসামী জাহাঙ্গীর আলমের মাথা ও শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতসহ গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায় কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ওভারব্রিজের পাশে।
লাশ পাওয়ার পর জাহাঙ্গীরের স্ত্রী মামলার বাদী রোজিনা খাতুন সংবাদ মাধ্যম bdnews24.com-এ দাবি করেন তার স্বামীকে ১৯ জানুয়ারি রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন ঢাকার জয়দেবপুর থেকে ধরে নিয়ে যায়। তার সাথে সাইফুল হত্যা মামলার আরেক আসামী জবানও ছিলো যার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায় ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪।
জাহাঙ্গীরের লাশ পাওয়ার পর তার মা জয়গুন জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো-কে বলেছিলেন, তার ছেলেকে ঢাকার বোর্ডবাজার থেকে আটক করা হয়।
সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া অপর এক সাক্ষাৎকারে ১ ফেব্রুয়ারিতে সিরাজগঞ্জ এসে বিএনপি নেতা জমির উদ্দিন সরকার দাবি করেছিলেন সাইফুল হত্যা মামলার প্রধান আসামী জবান আলী, বাবলু ও জাহাঙ্গীরকে ঢাকা থেকে আটক করে নিয়ে যায় র্যাব। এর মধ্যে আসামী বাবলুকে ৩০ জানুয়ারি ২০১৪ র্যাব ক্রসফায়ারে হত্যা করলেও বাকি দুজনকে গুম করেছে বলে জমির উদ্দিন অভিযোগ করেন।
এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ মামলার প্রধান আসামী জবান আলীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। অতঃপর ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ অপর আসামী জাহাঙ্গীরের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের দাবি ছিলো বাবলু ও জাহাঙ্গীর শীর্ষ সন্ত্রাসী ও প্রধান আসামী জবান আলীর অন্যতম সহযোগী ছিলো।
তৎকালীন সময়ে পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি মতে তিনটি গুলিবিদ্ধ ৩টি হত্যাকান্ডের ঘটনাই র্যাবের ক্রসফায়ার বলে জানা গেছে। জাহাঙ্গীরের লাশ পাওয়ার ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা মামলাটির তদন্তে কোনো ব্যক্তির সম্পৃক্ততা না পাওয়া তদন্তকারী চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে এবং মামলাটি ১৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে নিষ্পপ্তি হয়ে যায়।
তবে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ড. মুহাম্মাদ ইউনুসের অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সারাদেশে মামলা বাণিজ্য ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক অজস্র মামলার ধারাবাহিকতায় তৎকালীন সময়ের সেই ক্রসফায়ারে নিহতের ঘটনা হয়ে গেছে হত্যা ও চাঁদাবাজির মামলা।
সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাতকে প্রধান আসামী করে আওয়ামী লীগের ৪২জন নেতাকর্মীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে ও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে দায়ের করা হয়েছে চাঁদাবাজি ও হত্যা মামলা (পিটিশন মামলা নং- ০৭/২০২৫ (কামারখন্দ); তারিখ- ২৬ জানুয়ারি ২০২৫)। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা চাঁদা নেওয়ার পরও সাইফুল হত্যা মামলার আসামী সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীরকে গুলি করে হত্যা করেছে নতুন দায়েরকৃত মামলার আসামীরা। সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন তাহলে কী বাংলাদেশে মামলা বাণিজ্য ও মিথ্যা মামলার অবসান হবেনা?