জীবনের শেষ দিনে জগদীশ প্যাটেল, তার স্ত্রী এবং তাদের ছোট দুই সন্তান কানাডিয়ান সীমান্তের প্রায় ফাঁকা একটি পথ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। ২০২২ সালের জানুয়ারির ওই রাতে এতোটাই ঠান্ডা পড়েছিল যে, পারদ নেমে এসেছিল মাইনাস ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে এবং ভারতীয় পরিবারটি পায়ে হেঁটে অপেক্ষমাণ একটি ভ্যানের দিকে যাচ্ছিল। বিশাল খামার ভূমির ভেতর দিয়ে তারা হাঁটছিলেন। তাও প্রায় চাঁদের আলোবিহীন অন্ধকার রাতে।
উত্তর মিনোসোটায় অপেক্ষমাণ চালক তার মনিবকে বার্তা পাঠানÑএই বিরূপ আবহাওয়ায় প্রত্যেকেই যাতে উপযুক্ত পোশাক পরে নেন দয়া করে সেটা নিশ্চিত করুন।
ফেডারেল প্রসিকিউটররা বলেন, কানাডায় পুরো আয়োজনটির সমন্বয় করেন অভিজ্ঞ মানবপাচারকারী হর্ষকুমার প্যাটেল, যিনি ‘ডার্টি হ্যারি’ নামেও পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের অংশে ছিলেন চালক স্টিভ শ্যান্ড। প্যাটেল তাদের ফ্লোরিডার বাড়ির কাছে একটি ক্যাসিনো থেকে সম্প্রতি তাকে নিয়োগ দেন।
এই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে উন্নত উপায় অবলম্বন করে মানবপাচারের অভিযোগ উঠেছে, যাদের বিচার সোমবার শুরু হওয়ার কথা। তবে উভয়েই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
প্রসিকিউটরদের দাখিল করা নথিতে বলা হয়েছে, পাঁচ সপ্তাহ ধরে এই দুজন একসঙ্গে কাজ করেন। কনকনে ঠান্ডার বিষয়ে উভয়েই প্রায় কথা বলতেন। কারণ, তারা সীমান্তের ওই নিভৃত পথ দিয়ে পাঁচজনের একটি ভারতীয় গ্রুপকে পাচার করেন।
আগের ট্রিপে শ্যান্ড তার বার্তায় বলেন, ১৬ ডিগ্রির তাপমাত্রা অসহ্য। তারা সেখানে পৌঁছালে বেঁচে যাবে।
২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি শেষ ট্রিপে শ্যান্ডের আরও ১১ ভারতীয়কে তুলে নেওয়ার কথা ছিল। তাদের মধ্যে প্যাটেল পরিবারও ছিল। তাদের মধ্যে মাত্র সাতজন বেঁচে যান। কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষ পরদিন সকালে প্যাটেল পরিবারকে ঠান্ডায় জমে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। জগদীশ প্যাটেলের বাহুতে ছিল তাদের তিন বছরের ছেলে ধার্মিক। তার দেহ একটি কম্বলে জড়ানো ছিল।