বাংলাদেশে চলমান সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অত্যাচার, অনাচার ও অপরাজনীতির বিরুদ্ধে ১৭ দেশের ১২৯ জন প্রবাসী বাংলাদেশী বিবৃতি প্রদান করেছেন। প্রবাসী বাংলাদেশীদের পক্ষে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নামে জামাত-শিবির, উগ্রবাদী জঙ্গিগোষ্ঠী গত জুলাই-আগস্টে কয়েক শতাধিক ছাত্র-জনতা ও পুলিশ হত্যা করে। অতঃপর আইএসআই-এর মদদে ও সেনাবাহিনীর একাংশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় একটি নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গত ৫ আগস্ট দেশ ত্যাগে বাধ্য করে। দেশে প্রতিষ্ঠিত হয় ড. ইউনুসের নেতৃত্বে জামাত ও জঙ্গিদের সমন্বয়ে সংবিধান বহির্ভুত তথাকথিত অন্তবর্তীকালীন সরকার। এরপরই বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সারা দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা, হত্যাসহ বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়, অদ্যবধি যা অব্যাহত রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর’ বা ঐতিহাসিক ‘বঙ্গবন্ধু ভবন’ স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত; যার মালিক বঙ্গবন্ধু পরিবারের কেউ নন। সেই বাড়ি ৫ই আগস্ট ২০২৪ ভাংচুর করে আগুনে জ্বালিয়া দেয়া হয়। এরপর গত ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ঘোষণা দিয়ে সরকারের প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর একাংশের প্রচ্ছন্ন সহযোগিতায় আবারও ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়। এভাবে স্থাপনা-সম্পত্তি ধ্বংস করা প্রচলিত আইনে ফৌজদারি অপরাধ। এই ‘নির্মম ধ্বংসযজ্ঞ’ সভ্য সমাজে অত্যন্ত লজ্জাজনক ও দুঃখজনক। এই ধ্বংসযজ্ঞের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টরা দায় এড়াতে পারেন না। এটি শুধুমাত্র একটি ভবন ধ্বংসের ঘটনা নয়, বরং ইতিহাস ও সংস্কৃতির ওপর বর্বর আঘাত। জনগণের অর্থে পরিচালিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রকাশ্যে সংঘটিত ‘নির্মম ধ্বংসযজ্ঞ’ এবং ফৌজদারি অপরাধের সময় নিষ্ক্রিয় থেকে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে অপরাধীদের সহযোগিতা করেছে! আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাড়ি তথা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলার হীন এই প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
আমরা খুবই উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, এই জঙ্গিগোষ্ঠী সারাদেশে আইএসআইএস (ISIS)-এর পতাকা নিয়ে মিছিল ও উল্লাস প্রকাশ করছে এবং সারা দেশব্যাপী আবারও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে চলেছে। বর্তমান অবৈধ সরকার জামাত- জঙ্গিদের হুমকীর কাছে নতি স্বীকার করেছে এবং প্রশাসন ও সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়েও পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে আছে।
আমরা আরও লক্ষ্য করছি যে অপারেশন ডেভিল হান্ট এর নামে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার জন্য বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার মত অবস্থার সৃষ্টি করা হয়েছে। অথচ, বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় ছিলো ।
আমরা বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা সকল প্রকার জঙ্গি হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
প্রিয় মাতৃভূমিকে শান্তিপূর্ণ, বসবাসপযোগী করতে দেশবাসীকে অন্যায়, অত্যাচার এবং সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর জন্য আহবান করছি।