১.
“পথিক”
————
উত্তপ্ত চোখের জলে প্রবাহিত
তটিনীর মাঝখানে দিয়ে বাঁধ,
পথিক সেই জলে
মিটাতে চায় সাধ।
বাঁধ ভেঙে খান খান
তটিনী প্রবাহিত হয় প্রকৃতির নিয়মে,
পথিকের ওষ্ঠাগত প্রাণ
নিথর যৌবনে।
যেভাবেই হোক পেতে হবে
প্রকৃতির সাথে করেছে যুদ্ধ,
প্রকৃতির দেহ রক্তাক্ত
তাই প্রকৃতি হয়েছে ক্ষুব্ধ।
হায় পথিক! হায় পথিক!
তুমিতো অনেক বুদ্ধিমান,
এতো কিছু আয়োজনের পরও
কে কেড়ে নিলো সাধের প্রাণ।
তটিনীতে ধ্বংস স্তুপ
আশাটুকু নিঃশেষ,
তারপরও হাসিমুখ
পথিক সব সময় বিশেষ।
২.
“জীবনবোধ”
——————
প্রদীপ নিভে গেলে
আবার জ্বালানো যায়,
হৃদয় পুড়ে গেলে
কষ্টের ছায়া পাশে এসে দাঁড়ায়।
মুখের হাসি ম্লান হলে
আবার হাসি আসে,
ভালবাসা হারিয়ে গেলে
উজ্জ্বল স্মৃতিটুকুকে ভালবাসে।
মুষল ধারে বৃষ্টি হলে
আবার রোদ ওঠে,
পুষ্পের পাপড়ি ঝরে গেলে
শুভ্র ফুল ফোটে।
চাঁদ ঢেকে গেলে
আবার দেখা যায়,
দু’চোখের পাতা ভিজে
রুপালি জ্যোৎস্না বিলায়।
মেঘে ঢেকে গেলে সূর্য্য
আবার ফিরে আসে উত্তাপ,
লাল টকটকে কৃষ্ণচূড়া
ভালবাসা করোনা পরিমাপ।
দুঃখ চলে গেলে
সুখ ফিরে আসে,
কতটুকু দুঃখ দিলে তৃপ্ত হবে
দুঃখ করোনা সর্বনাশে।
তোমার সাথে কথা হলে
জেগে জেগে কেটে যায় রাত,
গভীর রাত কেটে গেলে
ফিরে আসে নির্ঘুম প্রভাত।
জীবন চলে গেলে
আর ফিরে আসে না,
যেখান থেকে ফিরে আসা যায় না
সেটাই আসল ঠিকানা।
৩.
“আলোয় ভরে উঠুক আকাশ”
—————————————-
ভেজা চোখে ঝাপসা ছবি
কুয়াশায় ঘেরা চারিদিক,
ভালবাসার মেঠো পথে
কিভাবে অচেনা হলে পথিক।
স্বপ্নগুলো উড়ছে ঝিরি ঝিরি বাতাসে
চারিদিকে বাজে হৃদয় ভাঙ্গা গান,
যত দূরে যাওনা কেন?
হৃদয়ে রয়েছে অম্লান।
পুরোনো কবিতা ভেসে আসে
আঁধার নামে গোঁধুলী বেলা,
ঘুমিয়ে পড়েছে জ্যোৎস্না ছড়ানো চাঁদ
আকাশে তারার মেলা।
নির্ঘুম শীতের রাতে
বার বার ডাকছে কেন পিছুটান?
বন্ধ জানালা কপাট
কড়া নাড়ে চেনা সেই আহ্বান।
হারিয়ে গেছে সোনালী রোদ
তাই এত অভিমান,
আলোয় ভরে উঠুক আকাশ
সূর্য্যের নেই সন্ধান।
৪.
“একটি অপ্রকাশিত কবিতা”
————————————–
একটি অপ্রকাশিত কবিতা
নীরবে হেঁটে চলে হৃদয়ে,
কখনও ক্লান্ত হয় না
থেমে যায় না ভয়ে।
বাতায়ন জুড়ে সোনালী রোদ
বাক্যগুলো বড়ই চঞ্চল,
উত্তাপ ছড়ায় শব্দ
প্রকাশিত হওয়ার ইচ্ছেটা প্রবল।
উচ্চারণ করতে চায় বিদ্রোহী কন্ঠ
কি মধুর ছন্দে!
নিরুপায় ঠোঁট
কবিতা রয়েছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে।
কষ্টটা চলে হেলে দুলে
মরুভুমির দীর্ঘ পথ,
অপেক্ষায় থাকে এক ঝুড়ি সত্য
দোলনায় দোল খায় মতামত।
কি যে নিস্তব্ধতা!
একটি অপ্রকাশিত কবিতা,
শুভ্র কাগজ হয়ে যায় ধূসর
গ্রাস করে বিষণ্নতা।
কাজল কালো অক্ষর
জড়িয়ে আছে শিউলি ফুলের মালা,
কবিতা করেছে বিদ্রোহ
সময় বদলের পালা।