১.
“মৃত্তিকায় জমেছে শ্যাওলা”
————————————-
ফুলের সাদা পাপড়িগুলো
ছিড়ে ফেলার শব্দ,
সত্য আওয়াজ যখন
চার দেয়ালে আবদ্ধ।
নিস্তব্ধ গভীর রাত
চারিদিকে শুধুই মরুভুমি,
ধুলোবালিতে চোখের জল
তারপরও পথ হারাবে না তুমি।
আলোর তীব্রতায় নিরুপায় অন্ধকার
ভুল করে ভুলে যেও না,
সকাল হলেই রোদের উত্তাপ
বেজে ওঠে বিজয়ের বীণা।
কাঁদছে বর্নমালা
তাকিয়ে থাকে রক্তে লেখা অস্তিত্ব,
অসংখ্য মানুষের চোখের জলে
বাংলার মাটি সিক্ত।
মৃত্তিকায় জমেছে শ্যাওলা
পথটা অনেক পিচ্ছিল,
হৃদয়ে জমেছে বেদনা
আকাশটা নীল।
ধমনীতে প্রবাহিত রক্ত
গাইছে হৃদয়ের সুর,
যতই দেখাও চোখ রাঙানি
সেদিন বহুদূর।
রক্তের রং লাল
তুমি যদি বলো নীল,
কেউ মানবে না
মাঝখানের পাঁচিল।
আবার ফুল ফোটে
হারিয়ে যায় অর্বাচীন,
হৃদয় জুড়ে ফাগুন
চারিদিকে রঙে রঙে রঙিন।
হাত দিয়ে কোমল স্পর্শ
জন্মভূমির মাটি,
অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝরে
দেশপ্রেমটা খাঁটি।
২.
জীবন – মৃত্যু
——————
রাত জানে
ভোরের মূল্য,
চোখের জলে প্রবাহিত
তুমি শুধু তোমার তুল্য।
দিন জানে
রাতের সৌন্দর্য্য,
মেঘে ঢাকা দুপুরে
তোমার ঐশ্বর্য।
জীবন জানে
মৃত্যু থেকে বাঁচার যুদ্ধ,
নতুন জীবনের আনন্দে
হৃদয়টা যখন মুগ্ধ।
মৃত্যুর মুখোমুখি
নোনা অশ্রুপাতে,
এক পলক দেখা হয়েছিলো
আলোর সাথে।
সমুদ্র সৈকতে
বানানো বালির ঘর,
এক পলকে হয়ে যায়
ধুধু বালিচর।
৩.
‘আকাশ দেখবো বলে’
——————————
আকাশ দেখবো বলে
খুলে দিলাম বাতায়ন,
আকাশ ঢেকেছে অভ্র
আঁখি বুজে দেয় পবন।
পবন অনুভব করবো বলে
আঁখি বুজেছি,
বন্ধ আঁখিতে
পুষ্পের সৌরভ খুঁজেছি |
বৃষ্টি দেখবো বলে
ঘরের বাইরে এসেছি,
আনন ভিজেছে
তাই আনন্দে মেতেছি।
ফুল দেখবো বলে
বৃষ্টির রং তুলিতে এঁকেছি একটি ফুল,
সারাদিনের বারিপাতে
ভেঙ্গেছে দু’কূল।
অবিরাম বৃষ্টির মাঝে
উঁকি দেয় প্রভাকর,
হারিয়ে যায় বৃষ্টি
চিকচিক দিবাকর |
আষাঢ় মাসের আসারে
হারিয়ে গেছে চাঁদের চন্দ্রবিন্দু,
খুঁজেছি রুপালি জ্যোৎস্না
হিমালয় থেকে সিন্ধু।
বৃষ্টিতে ভেজা দুঃখ
এই বৃষ্টি বেলা,
বানভাসি মানুষের কষ্টকে
করোনা হেলা |
৪.
“আমার চোখে”
———————
আমার চোখে
কৃষ্ণচূড়ার লাল,
তোমার চোখে
ভালবাসা উত্তাল।
আমার চোখে
নোনা জল,
তোমার চোখে
স্পষ্ট মনোবল |
আমার চোখে
বিপ্লবের অগ্নি,
তোমার চোখে
কলস হাতে রমনি।
আমার চোখে
তপ্ত দুপুর বেলা,
তোমার চোখে
জ্যোৎস্না রাতে তারার মেলা।
লেখক: মো. সরওয়ার হক চৌধুরী, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক