(১)
“শুকিয়ে গেছে জলরাশি”
মোঃ সরওয়ার হক চৌধুরী
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
পাখির বাসায় ঘর বেঁধেছি
তোমায় খুঁজবো বলে,
বাতাসের সাথে মিশে যাবো
আকাশে উড়ার ছলে |
মাছের সাথে কেটেছি সাঁতার
তোমাকে দেখবো বলে,
তরঙ্গের সাথে মিশে যাবো
মেতেছি আনন্দে সমুদ্রের কল্লোলে |
পথে পথে মুক্ত উদ্যানে
তোমার গান শুনবো বলে,
কোকিলের মধুর কন্ঠে
গান না শুনিয়ে তুমি গেলে চলে |
আলোর নিচে দাঁড়াই
ছায়ার সাথে কথা হবে বলে,
অনুভূতিটা বড়ই প্রখর
মৌমাছিরা উড়ছে দলে দলে |
কুয়াশায় ভিজেছে চোখ
শীতের সকালে তোমার হাসি দেখবো বলে,
ভাঁপা পিঠা থেকে উড়ছে ধোঁয়া
খেঁজুর গাছে রসের হাড়ি দোলে |
তটিনীর দিকে তাকিয়ে আছি
মাছরাঙা হয়ে আসবে বলে,
এক পলকে উড়ে গেলে
অসংখ্য মানুষের কোলাহলে |
তটিনীর বুকে নৌকা চলে
তুমি আসবে বলে,
নয়ন দু’টি নীরব তাকিয়ে থাকে
পানকৌড়ি খেলা করে জলে |
প্রকৃতির স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ হয়ে ওঠে মন
প্রকৃতির মাঝে আসবে বলে,
শুকিয়ে গেছে জলরাশি
গাছে গাছে আগুন জ্বলে |
জানালা জুড়ে হিমেল হাওয়া
গোধূলি বেলায় সূর্যাস্ত দেখবো বলে,
হারিয়ে যাওয়া রোদের মতো চারিদিকে জনশূন্য
নিষেধাজ্ঞা রয়েছে অবাধ চলাচলে |
তোমার হাতে হাত রেখেছি
তোমার সাথে হাঁটবো বলে,
এতদিন পর
স্বপ্নে তুমি এলে |
(২)
“সত্যের লুকোচুরি”
মোঃ সরওয়ার হক চৌধুরী
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
ঝিরি ঝিরি পবনে দোল খায় বিহঙ্গ
সমুদ্র সৈকতে গড়াগড়ি করে শুক্তি,
আননের উপর খেলা করে সূর্য কিরণ
বিবেকের মেলে না মুক্তি |
সত্যের লুকোচুরি
এলোমেলো কেশ,
হাসিটুকু আত্মগোপনে
চারিদিকে এতো কেন দ্বেষ !
এক ঝুড়ি প্রতারণায়
নিভেছে শান্তির প্রদীপ,
চোখের পাতায় অনুশোচনা
আত্মঘাতী জীব |
দেখেছে জ্যোৎস্না রাতে
ভেবেছে অনেকবার,
শীতল ছায়ায় মিশে আছে
ভাবনার পাহাড় |
মুষ্টিবদ্ধ হাতে
পরিধান করেছে চীড়,
গর্জন করে এগিয়ে আসে
সমুদ্রের নীর |
বৃষ্টি ভেজা দিনে
নিজেকে করেছে সমর্পন,
বিদ্যুৎ চমকানিতে
উজ্জ্বল শ্রাবণ |
আলোর মশাল হাতে
আঘাত করেছে আঁধারে,
নয়ন হয় আলোকিত
সত্য হেসে ওঠে বারে বারে |
পাখি ডাকা ভোরে
ঝুম বৃষ্টি আর আকাশের গুড় গুড় শব্দে জেগে ওঠা,
ক্লান্ত চোখে নতুন দিন
সূর্যের আলোর ছটা |
(৩)
খুঁজেছি অনেক দূরে
মোঃ সরওয়ার হক চৌধুরী
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
ফুটপাতের হোটেলে খেয়ে
স্বপ্নটা চোখে নিয়ে হেঁটেছি সারাবেলা,
সময়টা বড়ই কঠিন
তাই করেছে হেলা |
হৃদয়ের জানালা কপাট বন্ধ
কেড়ে নেয়া বড়ই কঠিন,
দক্ষিণা বাতাসে জানালা করছে শব্দ
মেটাতে এসেছে ভালবাসার ঋণ |
কামিনী ফুলের মাতাল করা সুগন্ধে
কপাট গেলো খুলে,
নীলকণ্ঠ পাখি হয়ে এক’পা দু’পা করে এগিয়ে
দাঁড়িয়ে আছে এলোচুলে |
লাল শাড়িটা ধরেছে জড়িয়ে
জলোচ্ছ্বাসের মতো চোখের জল,
কোলাহলের মাঝে বড়ই একলা
চোখে শোকের কাজল |
কষ্টটা মেঘ হয়ে ঝরছে
হৃদয়ে আকাশের সব নীল,
কৃষ্ণচূড়ার মতো লাল হয়েছে আনন
জীবনটা বর্ণিল |
অসংখ্য গোলাপী পাপড়ি
ধুলোর গায়ে লেগে আছে,
খুঁজেছি অনেক দূরে
রয়েছে দু’চোখের খুব কাছে |
দু’চোখকে ঘিরে রেখেছে
মাঝরাতের কুয়াশা,
রোদ্রের আলোতে ঝিকিমিকি
নিষ্ঠুর ভালবাসা |
বলছে কথা লাল ঠোঁট
কা•••• কা•••• করে দাঁড়কাক,
নদী মিলেছে সাগরে
জীবন নদীর বাঁক |
চোখের পাতা ভিজেছে
বৃষ্টির জলকনায়,
পুষ্প যদি সুবাস ছড়ায়
সেটি নয় অন্যায় |
(৪)
“নিঃসঙ্গতার কিছু সময়”
মোঃ সরওয়ার হক চৌধুরী
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
সকালে তটিনীর ঢেউয়ে পড়েছে
সোনালী রোদ,
তটিনীর পাড়ে এক ঝাঁক বিহঙ্গ
নয়নে রোদ পড়েছে তাই করেছে ক্রোধ |
বিহঙ্গগুলো করছে পান
তটিনীর জল করবে নিঃশ্বেস,
বিহঙ্গগুলোর হলো সলিল সমাধি
কাজটা ছিল না বেশ |
গগন থেকে তটিনীতে ঝরছে বৃষ্টি
ডুবে গেছে তট তাই তটিনীর জেগেছে ক্রোধ,
গগন বৃষ্টি বন্ধ করায় মরে গেছে তটিনী
চৈত্র মাসে তটিনী হারিয়েছে বোধ |
চাঁদ ছড়াবে জ্যোৎস্না
সূর্যাস্ত না হওয়ায় চাঁদের লেগেছে ক্রোধ,
সূর্যের আলো দেয়া বন্ধ হয়েছে চাঁদে
অমাবস্যায় প্রকৃতি নিয়েছে শোধ |
ভাল কিছুর জন্য সামনে এগুতে গেলে
মাঝে মাঝে কিছুটা পিছাতে হয়,
যদি হয় কৌশল
সেটি নয় ভয় |
কোলাহল ছেড়ে অনেক দূরে
নিঃসঙ্গতাকে করতে উদযাপন,
মন জুড়ে প্রবল বিশ্বাস
কোলাহলে যারা ছিল আপন |
অসময়কে পিছু ফেলে সামনে সময়
সময় জানাতে চায় খবর,
দু’হাতের তালুতে আলোর বিচ্ছুরণ
সূর্য ওঠা ভোর |
প্রকৃতি চিরকালই সত্য
প্রকৃতিকে করতে হয় উপভোগ,
আত্মঘাতী ক্রোধ
জীবনে করে না কিছু যোগ |